কোটা আন্দোলনে ৯ দফা দাবি কি কি – ছাত্রদের ৯ দফা দাবি কি কি ?

কোটা আন্দোলনকে ঘিরে ছাত্রদের ৯ দফা দাবি কি কি তা জানতে পারবেন আজকের এই পোস্ট থেকে। যখন বাংলাদেশের ছাত্র নাগরিক কোটা বিরোধী আন্দোলন শুরু করে তখন সরকার সেটাকে মেনে নিয়ে সমাধান করতে পারতো। কিন্তু সরকার তা না করে নীরস্ত ছাত্রদের উপর গুণী বর্ষণ, হত্যা, গুম, গ্রেপ্তার এর মাধ্যমে তা এড়ানোর চেষ্টা করেছে। এর ফলে জীবন দিতে হয়েছে হাজারো নিরস্ত্র সাধারন শিক্ষার্থীকে। যেন এক রক্তের লাল সিঁদুরে বয়ে গেছে সোনার বাংলাদেশ।

অবশেষে সরকার ছাত্রদের বৈষম্য বিরোধী কোটা আন্দোলন কে মেনে নিলেও যে ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে তার প্রেক্ষিতে ছাত্ররা ৯ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এই কর্মসূচিতে ছয় জন মন্ত্রীদের পদত্যাগ, বিচার ও বিভিন্ন দাবি তুলে ধরা হয়।

ছাত্রদের ৯ দফা দাবি কি কি

১ আগস্ট ছাত্রদের এই নয় দফা দাবিকে “রিমেমবারিং দ্যা হিরোস” নামে নতুন কর্মসূচি পালন করেন। তাহলে চলুন ছাত্রদের ৯ দফা আন্দোলনের কর্মসূচি গুলো কি ছিল তা জেনে নেই।

দাবি- ১
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ছাত্র নাগরিক হত্যার দায় নিয়ে জাতির কাছে প্রকাশ্য ক্ষমা চাইতে হবে।

দাবি- ২
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও দলীয় ক্যাডার এবং সন্ত্রাসী কর্তৃক ছাত্র নাগরিক হত্যার দায় নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এবং আইনমন্ত্রী আনিসুল হক কে মন্ত্রিপরিষদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে।

ইন্টারনেট শাটডাউন করে দেশের ডিজিটাল ক্রাকডাউন করায় তথ্য প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকে পদত্যাগ করতে হবে।

আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় এবং শহীদ শিক্ষার্থী ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদেরকে ড্রাক অ্যাডেক্টেড বলে কুরুচিপূর্ণ ও মিথ্যা বক্তব্য দিয়ে এবং আন্দোলনকে ভিন্ন ভাবে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করায় তথ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাতকে পদত্যাগ করতে হবে।

দাবি- ৩
ঢাকা সহ যত জায়গায় ছাত্র নাগরিক শহীদ হয়েছে সেখানকার ভিআইপি পুলিশ কমিশনার ও পুলিশ সুপারদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করতে হবে।

দাবি- ৪
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশের প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যেখানে ক্যাম্পাসে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা হয়েছে, প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এবং প্রক্টরকে পদত্যাগ করতে হবে।

দাবি- ৫
যে পুলিশ, বিজিবি, র‍্যাপ ও সেনা সদস্যরা শিক্ষার্থীদের উপর গুলি করেছে, ছাত্রলীগ যুবলীগ সহ যে সকল সন্ত্রাসীরা শিক্ষার্থীদের উপর নৃশংস হামলা পরিচালনা করেছে এবং যে সকল নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তাদেরকে নিরস্ত্র ছাত্র নাগরিকদের উপর গুলি করার নির্দেশ দিয়েছে তাদেরকে আটক করে হত্যা মামলা দায়ের করতে হবে এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার করতে হবে।

দাবি- ৬
দেশব্যাপী যে সকল ছাত্র নাগরিক শহীদ ও আহত হয়েছে তাদের পরিবারকে অতি দ্রুত সময়ে যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে।

দাবি- ৭
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশের প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগ নামক সন্ত্রাসী সংগঠনসহ সকল লেজরভিত্তিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিয়মতান্ত্রিকভাবে ছাত্র সংসদ কার্যকর করতে হবে।

দাবি- ৮
অবিলম্বে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং হল গুলো খুলে দিতে হবে। কারফিউ তুলে নিয়ে সারাদেশে সমস্ত ক্যাম্পাসে মোতায়েনরত পুলিশ, আর্মি, র‍্যাপ তুলে নিতে হবে।

দাবি- ৯
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত শিক্ষার্থীদের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কোন ধরনের হয়রানি করা হবে না এই মর্মে অঙ্গীকার করতে হবে। ইতিমধ্যে গণ গ্রেপ্তার ও পুলিশি হয়রানির শিকার সমন্বয়কবৃন্দ ও ছাত্র নাগরিকদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে ও সকল মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।

উপসংহার – এই ছিল ছাত্রদের ৯ দফা দাবি বা কর্মসূচি। ২০২৪ সালের এই জুলাই ও আগস্ট মাস হয়ে থাকবে বাংলাদেশের ইতিহাসে নতুন এক কালো অধ্যায়। পোস্টটি ভালো লাগলে বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ

This is MOJNU Proud owner of this blog. An employee by profession but proud to introduce myself as a blogger. I like to write on the blog. Moreover, I've a lot of interest in web design. I want to see myself as a successful blogger and SEO expert.

Leave a comment